গ্রীষ্মকালীন ফলের উপকারিতা সমূহ কি কি?

গ্রীষ্মকালীন ফলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ জানুন

গ্রীষ্মকাল হলো প্রচণ্ড গরম, ঘাম ও পানিশূন্যতার (মাস) সময় । এই সময় শরীর সতেজ রাখতে এবং পানির ঘাটতি পূরণ করতে গ্রীষ্মকালীন ফলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমনঃ আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, তরমুজ, আনারস, বাঙ্গি, কাঁচা ও পাকা তাল, নারিকেল ইত্যাদি। 

গ্রীষ্মকালীন-ফলের-উপকারিতা

গ্রীষ্মকালীন ফলগুলো দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, শরীর ঠান্ডা করে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। অধিকাংশ ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ, যা দেহের কোষগুলোকে রক্ষা করে এবং ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে সহায়তা করে।

সুচিপত্র

গ্রীষ্মকালে ফল খাওয়া উচিত কেন?

গ্রীষ্মকালে ফল খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই গ্রীষ্মকালিন সময়ে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে, ফলে শরীর দ্রুত পানিশূন্য হয়ে পড়ে। 

গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন তরমুজ, বাঙ্গি, আম, জাম, লিচু, আনারস, কাঁঠাল প্রভৃতি ফলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজ লবণ থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। 

এছাড়া এসব ফলে ভিটামিন সি, এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টি উপাদান?

গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন আম, তরমুজ, লিচু, জাম, কাঁঠাল, আনারস, বাঙ্গি ইত্যাদি কেবল সুস্বাদু ফল  নয়, বরং এগুলো পুষ্টিতে ভরপুর। 

এই ফলগুলোতে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নানা ধরণের ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজ পদার্থ, যা গ্রীষ্মকালের তাপদাহে শরীরকে সতেজ ও সজীব রাখতে সহায়তা করে।

আম

গ্রীষ্মের প্রধান ফল হিসেবে পরিচিত, এতে প্রচুর ভিটামিন এ, সোডিয়াম এবং ভিটামিন সি রয়েছে, যা প্রসূতি মহিলাদের জন্য খুবই উপকারী। ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে, আর ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

এছাড়াও আমে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

তরমুজ 

তরমুজ একটি পানি জাতীয় ফল, যার প্রায় ৯২% পানি। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, এ, বি৬ ও লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

লিচু

লিচুতে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, দাঁতকে মজবুত করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হাঁড় গঠনে সহায়তা করে, এছাড়া এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।

কাঁঠাল

কাঠাঁল আমাদের জাতীয় ফল, যা দেখতে কাঁটা যুক্ত এবং ফলের রং হলুদ বর্ণের। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এ, সি ও বি-কমপ্লেক্স রয়েছে। এটি শক্তির ভালো উৎস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কার্যকর।

আনারস

আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন নামক একটি এনজাইম, যা হজম শক্তি বাড়ায়। এতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের কোষকে সুরক্ষা দেয়। যাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কম তাদের জন্য আনারস অত্যন্ত উপকারী।

বাঙ্গি

বাঙ্গি পানির ভালো উৎস। এতে আছে ভিটামিন এ ও সি, যা ত্বকের সুরক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে  সহায়তা করে, এবং ত্বকের কোষ নষ্ট হয়ে গেলে তা ঠিক করতে সাহায্য করে।

গ্রীষ্মকালীন ফলগুলো শরীরের পানিশূন্যতা পূরণ করে, হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং পুষ্টি সরবরাহ করে শরীরকে সুস্থ রাখে। তাই গ্রীষ্মকালে এই ফলগুলো খাদ্যতালিকায় রাখা অত্যন্ত জরুরী।

ফল খাওয়ার আগে না পরে খাওয়া ভালো?

ফল খাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো খাবারের আগে বা খালি পেটে। কারণ খালি পেটে ফল খেলে তা দ্রুত হজম হয় এবং এর পুষ্টি উপাদান সহজে রক্তে মিশে যায়। ফলে শরীর তা দ্রুত কাজে লাগাতে পারে। এতে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেকাংশে কমে যেতে সাহায্য করে।

ভারী খাবারের পরপরই ফল খাওয়া অনেক সময় হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, তখন পাকস্থলীতে থাকা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ফলের মিশ্রণ হজম প্রক্রিয়াকে বাঁধা গ্রস্থ করে। ফলে ফল পচে গিয়ে গ্যাস বা বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

বিশেষ করে, তরমুজ বা আনারসের মতো রসালো ফল খেলে খাবারের পরে পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি তৈরি হতে পারে।

তবে কেউ যদি একান্তই ফল খাবার খাওয়ার পরে খান, তাহলে অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিরতি দিয়ে খাওয়াটাই উত্তম। এছাড়াও যারা ডায়াবেটিকস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ফল খাওয়ার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

গ্রীষ্মকালীন কোন কোন ফলে ফাইবার থাকে?

গ্রীষ্মকালীন যেসব ফলে প্রচুর ফাইবার থাকে তার মধ্যে কাঁঠাল অন্যতম। কাঁঠালে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় ধরনের আঁশ থাকে, যা পাচনতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। একইভাবে, আম একটি জনপ্রিয় গ্রীষ্মকালীন ফল যা ভিটামিন ও মিনারেলের পাশাপাশি ফাইবার সমৃদ্ধ। বিশেষ করে পাকা আমের আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

তরমুজ যদিও পানিসমৃদ্ধ ফল তবুও হৃদরোগীদের জন্য এটি বেশ উপকারী একটি ফল। তবুও এতে সামান্য পরিমাণ ফাইবার থাকে যা হাইড্রেশন ও হজমে সাহায্য করে। লিচুর মাঝারি পরিমাণ আঁশ থাকে যা অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায় এবং হজমে সহায়ক হয়।

কামরাঙা, জাম, আনারস, এবং কুল এই ফলগুলিতেও ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে। আনারসে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে এবং দেহের টক্সিন অপসারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কামরাঙার আঁশ রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ফাইবার গ্রহণের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ফল খাওয়ার সময় ফলের চামড়া বা খোসাসহ খাওয়া, কারণ, অধিকাংশ আঁশ ফলের খোসায় থাকে। গ্রীষ্মকালে এসব আঁশসমৃদ্ধ ফল খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে, হজম ঠিক থাকবে এবং স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।

গ্রীষ্মকালীন বেরি খাওয়া কি উপকারী?

গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে বেরি জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরি ও ব্ল্যাকবেরি অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল। এই ফলগুলোতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও ফাইবার যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

গ্রীষ্মকালে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, আর এই সময়ে বেরি জাতীয় ফল পানির ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে। বেরিতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ঠান্ডা লাগা বা ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। ব্লুবেরি ও রাসবেরিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

বেরি ফলে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় এই ফল  হজমে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য বেরি  একটি আদর্শ ফল হতে পারে। কারণ এতে ক্যালোরি কম থাকে, পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে।

গ্রীষ্মকালীন এই ফলগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং মন ভালো রাখে। নিয়মিত বেরি খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গ্রীষ্মকালে বেরি খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এটি শুধু শরীরের ভেতরের সুস্থতা রক্ষা করে না, বরং বাইরের সৌন্দর্যও বজায় রাখে।

গ্রীষ্মকালের রাজা ফল কোনটি?

আম কে বলা হয় গ্রীষ্মকালের রাজা। এই ফলকে “গ্রীষ্মকালের রাজা” বলা হয়, কারণ এটি শুধু স্বাদে অনন্য নয়, বরং পুষ্টিগুণেও অনন্য। বাংলাদেশসহ, ভারত, পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে আম অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে এটি সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়।

আম বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে, যেমন ল্যাংড়া, ফজলি, হিমসাগর, গোপালভোগ, আমরূপালি ইত্যাদি। প্রতিটি জাতের আমের স্বাদ, গন্ধ ও রঙে ভিন্নতা থাকলেও প্রতিটির মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক মিষ্টি ও পুষ্টির এক অসাধারণ সমন্বয়। 

আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, ই, পটাশিয়াম  এবং খনিজ পদার্থ। এটি চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।

গ্রীষ্মকালে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে, তখন আম খেলে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। আম দিয়ে তৈরি করা যায় নানা ধরনের খাবার ও পানীয় যেমন আমের জুস, আমচূর্ণ, আমের আচার, আমের মিল্কশেক, আমের আইসক্রিম ইত্যাদি। 

বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে আমের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। গ্রীষ্ম মৌসুমে আমচাষ একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। বিশেষ করে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের আম দেশে বিদেশে  রপ্তানিও করা হয়।

পেঁপে কি গ্রীষ্মকালীন ফল?

হ্যাঁ, পেঁপে একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের অত্যন্ত পরিচিত ও পুষ্টিকর একটি ফল, যা সারা বছর ধরেই পাওয়া গেলেও গ্রীষ্মকালে এর উৎপাদন ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। পেঁপে গ্রীষ্মের উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ায় খুব ভালোভাবে জন্মায়, তাই এটি গ্রীষ্মকালীন ফল হিসেবে পরিচিত।

পেঁপেতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই  ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং খনিজ পদার্থ। যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ভিটামিন সি গ্রীষ্মকালে দেহের অতিরিক্ত ঘাম ও পানিশূন্যতা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

লিচু কি গ্রীষ্মকালীন ফল?

হ্যাঁ, লিচু একটি গ্রীষ্মকালীন ফল। এটি বাংলাদেশের জনপ্রিয় ও সুস্বাদু ফলগুলোর একটি, যা মূলত গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায় এবং ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সাধারণত এপ্রিলের শেষ থেকে জুন মাস পর্যন্ত লিচুর মৌসুম চলে।

বাংলাদেশের দিনাজপুর, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ এবং টাঙ্গাইল অঞ্চলে লিচুর চাষ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই ফলটির বাইরের খোসা খসখসে কাঁটা যুক্ত এবং লাল রঙের হয়, আর ভিতরে থাকে সাদা রসালো শাঁস যা খেতে অত্যন্ত মিষ্টি ও রসালো।

লিচুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং ফাইবার থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে শরীরে পানিশূন্যতা দূর করতে লিচু অত্যন্ত উপকারী একটি ফল।

গ্রীষ্মকালে কোন ফল ভালো হয়?

গ্রীষ্মকালে আবহাওয়া গরম ও রুক্ষ থাকায় শরীরকে ঠান্ডা ও সজীব রাখতে ফল খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। এই সময়ে যেসব ফল পাওয়া যায়, সেগুলো শুধু স্বাদের জন্যই নয়, বরং স্বাস্থ্য রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্রীষ্মকালে বিশেষভাবে যেসব ফল ভালো হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

আম

গ্রীষ্মকাল মানেই আমের মৌসুম। এটি “ফলের রাজা” নামে পরিচিত। আমে প্রচুর ভিটামিন এ, সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ত্বক ও চোখের জন্য উপকারী এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁচা আমে শর্করা ও পেকটিনের পরিমাণ বেশি থাকে।

লিচু

রসাল ও সুস্বাদু লিচু গ্রীষ্মকালে শরীরকে শীতল রাখে। লিচু লিভার ও ব্রেনকে সুরক্ষা করে। লিচু রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে চর্বির পরিমাণ কমায়। এতে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

তরমুজ

এটি প্রায় ৯২% জলীয় উপাদানে ভরা, যা দেহে পানির ঘাটতি পূরণ করে ও ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাছাড়া তরমুজ পেশির ব্যথা ও প্রদাহ কমায়, শরীরকে হাইড্রেট রাখে ও ত্বকে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। তরমুজে লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়ক।

খেজুর

গ্রীষ্মকালীন কিছু অঞ্চলে খেজুর ভালো পাওয়া যায়। এতে উচ্চমাত্রায় শক্তি ও খনিজ উপাদান থাকে, যা গরমে ক্লান্ত শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।

জাম

এটি রক্ত পরিষ্কারে সহায়ক এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও কার্যকরী। জাম খেলে হজমশক্তি বাড়ে এবং পেট ঠান্ডা থাকে। পাকা জামের রস পাকস্থলী ও যকৃতকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

পেঁপে ও আনারস

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে এই ফলগুলো দারুণ কার্যকর। এগুলোতে থাকা এনজাইম ও ফাইবার গ্রীষ্মকালীন গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করে।

পরিশেষে বলা যায়

গ্রীষ্মকালীন ফল আমাদের শরীরের জন্য সৃষ্টিকর্তার এক আশীর্বাদ। তীব্র গরমে যখন শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে, তখন এসব ফল আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। 

আম, তরমুজ, লিচু, আনারস, কাঁঠাল, বাঙ্গি, জাম, পেঁপে ও খেজুর প্রতিটি ফলেই রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার, যা মানব শরীরের ভেতরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url