হিন্দুদের পূজার প্রসাদ খাওয়া কি মুসলিমদের জন্য জায়েজ?
হিন্দুদের পূজার প্রসাদ খাওয়া
প্রশ্নঃ হিন্দুদের পূজার প্রসাদ বন্টন করা হয়। যার মধ্যে ফলমূলও থাকে আবার পাকানো খাদ্যদ্রব্যও থাকে। অনেক মুসলিম তা খেয়ে থাকে। মেহেরবানী করে জানাবেন এগুলো খাওয়া জায়েজ কিনা?
উত্তরঃ পূজার প্রসাদ শরই দৃষ্টিতে হারাম। কোনো মুসলিমদের তা খাওয়া জায়েজ নেই।
ইসলামি শরিয়তের রায়
ইসলামি শরিয়তের আলোকে স্পষ্টভাবে বলা যায় যে, পূজার প্রসাদ মুসলিমদের জন্য হারাম। এর কারণ হলো, এটি মুশরিকদের উপাসনা বা ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত।
কোরআন এবং হাদিসে আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের জন্য উৎসর্গকৃত খাদ্য খাওয়াকে দৃঢ়ভাবে নিষিদ্ধ করেছেন। আল্লাহ তাআলার বাণী অনুযায়ীঃ তোমাদের জন্য হারাম করা হলোঃ মৃত প্রাণী, রক্ত, শূকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।
(সূরা আল-মায়েদাহঃ ৩)
এই আয়াত থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বা অন্যের নামে উৎসর্গকৃত খাদ্য মুসলিমদের জন্য হারাম। যেহেতু পূজার প্রসাদ দেব দেবীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়, ফলে এটি খাওয়া কখনো জায়েজ নয়।
হাদিসের আলোকে প্রমাণ
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
যা আল্লাহর নামে জবাই করা হয়নি, তা খেও না। এটি ফাসিকদের কাজ।
(সহিহ মুসলিম)
অতএব, মুশরিকদের পূজার অংশ হিসেবে উৎসর্গকৃত খাবার খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
সামাজিক চাপ ও মুসলিমদের করণীয়
- অনেক সময় মুসলিমদের সামাজিকভাবে জোর করে প্রসাদ খেতে দেওয়া হয়।
- কিন্তু একজন সচেতন মুসলিমের জন্য উচিত, সভ্যতার সঙ্গে এবং নরমভাবে সেটাকে প্রত্যাখ্যান করা।
- কারণ, আল্লাহর অবাধ্যতার ভয়ে কাউকে কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়, কিন্তু নিজের ঈমান রক্ষা করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার
ইসলামি শরিয়তের দিক থেকে হিন্দুদের পূজার প্রসাদ খাওয়া হারাম এবং নিষিদ্ধ। এটি আল্লাহ ছাড়া আর কারো উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত।
এজন্য একজন মুসলিমের উচিত, এই ধরনের খাদ্য থেকে পুরোপুরি দূরে থাকা এবং তার পরিবারকেও এ সম্পর্কে সতর্ক করা।
বই এর প্রমাণঃ আপনাদের প্রশ্নের জবাব
খণ্ড নংঃ ১ম
পৃঃ নংঃ ৫১
লেখক এর নামঃ আল্লামা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানাবী
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url