এআই দিয়ে ভিডিও এডিটিং করা যায়


হ্যাঁ, এআই (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে এখন খুব সহজে ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। আগে যেখানে ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য কঠিন সফটওয়্যার এবং অনেক সময়ের দরকার হতো, এখন এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব  অল্প সময়ের ব্যবধানে  উন্নতমানের ভিডিও তৈরি করা যাচ্ছে। 

এআই-দিয়ে-ভিডিও-এডিটিং-করা-যায়


বিশেষ করে যারা ভিডিও এডিটিংয়ে নতুন, তাদের জন্য এআই সত্যিই একটি বড়ই উপকারি। এআই ভিডিও এডিটিং টুলগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনেক ধরণের কাজ করতে পারে, যেমন দৃশ্য কাটছাঁট, ট্রানজিশন, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সাবটাইটেল, কালার কারেকশন এবং মুখ চিনে ভিডিও সিনক্রোনাইজ করা। 

Runway ML, Pictory, Magisto, Descript, এবং Adobe Premiere Pro-এর AI-ভিত্তিক ফিচারগুলো ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ে ভিডিও তৈরি করা যায়। কিছু কিছু  টুল টেক্সট থেকে ভিডিও বানাতে পারে, আবার কিছু ক্লিপ বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো আলাদা করে দিতে  পারে। 

এআই ভিডিও এডিটর দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য কনটেন্ট, প্রোমোশনাল ভিডিও, ইউটিউব ভিডিও, রিলস বা শর্টস তৈরি করা বর্তমান সময়ে অনেক সহজ হয়ে এসেছে। 

এছাড়াও, ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন, ভয়েস এডিটিং করা এবং লিপ-সিন্ক করাতেও বর্তমানে AI খুবই দক্ষ। অনেক ক্ষেত্রেই এআই ম্যানুয়াল এডিটরের তুলনায় দ্রুত এবং নিখুঁত কাজ করে থাকে। 

সূচি পত্র

এআই কি ভিডিও কাটতে পারে

এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) এখন ভিডিও কাটিং করার  কাজে  অনেক  দক্ষতা অর্জন করেছে। আধুনিক ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে অনেকগুলি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও কাট, ট্রিম, ক্লিপ, রিসাইজ করতে অনেক দক্ষ। 

এর ফলে, একজন ব্যবহারকারী খুব সহজেই সময় সাশ্রয় করে মানসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারেন, এমনকি ভিডিও এডিটিংয়ে আগের কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও। 

এআই ভিডিও কাটিং সফটওয়্যারগুলো মূলত ভিডিওর দৃশ্য, শব্দ, মুখের আকৃতি এবং কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে এবং অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো বাদ দেয়। 

উদাহরণস্বরূপ, একটি ইন্টারভিউ ভিডিওতে এআই নিখুঁতভাবে কথা বন্ধ থাকা অংশগুলো চিনে নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাট করতে পারে। আবার, ভ্লগ বা ইউটিউব কনটেন্টে বারবার বলা বাক্য অংশগুলোও   টার্গেট করে মুছে দিতে পারে। 

বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু এআই ভিডিও কাটিং টুল গুলো হলো: Descript, Runway ML, Pictory, Wisecut, এবং Magisto। এই টুলগুলো শুধু ভিডিও কাটার কাজই করেনা, বরং স্বয়ংক্রিয় সাবটাইটেল যোগ করা, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বসাতে, ভয়েস তৈরি করতে এবং স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ভিডিও সাজিয়ে দিতে সক্ষম। 

এআই ভিডিও কাটিং প্রযুক্তি কনটেন্ট নির্মাতা, ইউটিউবার, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটার এবং অনলাইন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য একটি বিপ্লবী টুল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে, এই প্রযুক্তি আরও উন্নত হয়ে ভিডিও জগতে সম্পূর্ণ নতুন ইতিহাস রচনা করবে। 

এআই দিয়ে কী কী করা যায়

এআই, বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, আজকের যুগে আমাদের জীবনের অনেক ক্ষেত্রে একটি অপরিসীম ভূমিকা নিতে শুরু করেছে। এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা মানুষের মতো ভাবতে বুঝতে, শেখার মাধ্যমে উন্নতি ঘটাতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে । এআই এর মাধ্যমে  অনেক ধরণের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব, এবং এর ব্যবহার  দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

শিক্ষা খাতে এআই ব্যবহার করে স্মার্ট টিউটর তৈরি করা, ব্যক্তিগত শিক্ষার পরিকল্পনা তৈরি করা এবং ভাষা অনুবাদ করা সম্ভব। চিকিৎসা ক্ষেত্রে, রোগ নির্ণয়ে, চিকিৎসার পরিকল্পনায় এবং রোবটিক সার্জারিতে এআই কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। 

ব্যাংকিং এবং আর্থিক খাতে জালিয়াতি চিহৃিত করা  , গ্রাহকের সেবার মান  উন্নয়ন এবং ঝুঁকি বিশ্লেষণে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। 

এছাড়া, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটিং এবং ভিডিও এডিটিং-এর মত সৃজনশীল কাজে এআই ব্যবহার করা হচ্ছে। 

চ্যাটবট, ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট (যেমন Siri, Alexa) এবং স্বয়ংক্রিয় গ্রাহক সেবা প্ল্যাটফর্ম এই প্রযুক্তির বড় উদাহরণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। 

এআই দিয়ে স্বয়ংচালিত গাড়ি চালানো, নিরাপত্তা ক্যামেরার মাধ্যমে অপরাধ চিহ্নিত করা, মুখ শনাক্তকরণ, আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদান এবং কৃষিক্ষেত্রে মাটির গুণগত মান বিশ্লেষণ করে সঠিক ফসল বাছাই করা সম্ভব। 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় হলো, এআই আমাদের দৈনন্দিন কাজকে আরও সহজ, অনেক দ্রুত এবং কার্যকর করে তোলেছে। 

ভবিষ্যতে, এআই প্রযুক্তি আরও  অনেক  উন্নত হবে এবং কর্মসংস্থান, গবেষণা ও মানবকল্যাণে আরও বড় ধরণের অবদান রাখবে। তবে, এর ব্যবহার নৈতিক এবং নিরাপদ রাখার জন্য সচেতনতা ও নিয়ন্ত্রণ অতীব জরুরী ।  

এআই দিয়ে কিভাবে ভিডিও তৈরি করে

এআই (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে বর্তমান সময়ে ভিডিও তৈরি করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। 

এটি একটি সহজ পদ্ধতি, যেখানে মানুষ তার কনসেপ্ট, স্ক্রিপ্ট বা চিত্রনাট্য জমা দিলেই এআই সেই অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করে দিতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার হয় টেক্সট টু ভিডিও, ইমেজ টু ভিডিও এবং স্ক্রিপ্ট টু ভিডিও প্রযুক্তি। 

প্রথমে ব্যবহারকারী একটি স্ক্রিপ্ট বা টেক্সট ইনপুট করে দেয়। তারপর এআই সেই লেখা বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত ভিডিও দৃশ্য তৈরি করতে আরম্ভ করে। 

কিছু পরিচিত প্ল্যাটফর্ম যেমন Pictory, Synthesia, Lumen5, InVideo, Runway ML ইত্যাদি সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব সহজেই ভিডিও তৈরি করা যায়। 

আপনি যদি মুখভাষী ভিডিও তৈরি করতে চান, Synthesia-এর মতো প্ল্যাটফর্মে ভার্চুয়াল AI স্পিকার ব্যবহার করে আপনার স্ক্রিপ্টে ভিডিও বক্তৃতা তৈরি করা যায়। 

এছাড়া, কিছু এআই টুল রয়েছে যা শুধুমাত্র লেখা থেকে ভিডিও দৃশ্য তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি লিখেন একজন ছেলে সমুদ্রের ধারে  দৌরাচ্ছে , তখন AI সেই অনুযায়ী অ্যানিমেটেড বা বাস্তবসম্মত ভিডিও ফুটেজ তৈরি করে দিতে পারবে। 

এআই ভিডিও তৈরি করার আরেকটি ভালো দিক হল অডিও জেনারেশন বা প্রজন্ম। এই টুলগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ভয়েসওভার, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, এমনকি শব্দ প্রভাব যোগ করতে পারে। 

সব মিলিয়ে, ভিডিও এডিটিং,   দৃশ্যে পরিবর্তন, ব্যাকগ্রাউন্ড সংযুক্ত করা, এবং সাবটাইটেল বসানো এখন সবকিছুই AI দ্বারা খুব সহজে করা যায়। 

এই প্রযুক্তি কনটেন্ট নির্মাতা, মার্কেটার, শিক্ষক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের জন্য অসাধারণ সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। 

কিভাবে ফ্রি এআই ভিডিও তৈরি করব?

ফ্রি এআই ভিডিও তৈরি করার জন্য বর্তমানে বেশ কিছু অনলাইন টুল ও প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেগুলো ব্যবহার করে সহজেই কনটেন্ট তৈরি করা যায়। নিচে ধাপে ধাপে পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা হলো

বর্তমানে ফ্রি এআই ভিডিও তৈরি করার জন্য বেশ কয়েকটি অনলাইন টুল ও প্ল্যাটফর্ম উপলব্ধ আছে, যা ব্যবহার করে সহজেই কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব।

প্রথমে, আপনি ঠিক করুন কী ধরনের ভিডিও তৈরি করতে চাচ্ছেন এটি হতে পারে শিক্ষা, মার্কেটিং, গল্প, অথবা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য। এরপর একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন, যা ভিডিওতে কথা বলা বা তথ্য সংগ্রহ হিসেবে কাজ করবে।

এরপর, Pictory, Lumen5, Invideo, Canva, Steve.ai, বা Animoto এর মতো কোনো ফ্রি এআই ভিডিও টুল ব্যবহার করতে পারেন। ধরুন যে আপনি Pictory ব্যবহার করছেন, তাহলে প্রথমেই pictory.ai তে একটি ফ্রি অ্যাকাউন্ট খুলে নিন। 

স্ক্রিপ্ট বা প্রবন্ধ ইনপুট করুন, এরপর এআই আপনার লেখার ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও তৈরি করে দিবে , যেখানে অটো ইমেজ, ভিডিও ক্লিপ ও সাবটাইটেল থাকবে। 

Canva হল একটি সহজ টুল, যেখানে ভিডিও টেমপ্লেট বাছাই করে AI এর সাহায্যে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী লেখা, ছবি ও ভিডিও ক্লিপ বসাতে পারবেন। 

আরও উন্নত ভিডিওর জন্য Synthesia.io ব্যবহার করতে পারেন, যেখানে এআই অ্যাভাটার বা ভার্চুয়াল মানুষ আপনার লেখা স্ক্রিপ্ট পড়ে ভিডিও আকারে উপস্থাপন করবে। তবে মনে রাখবেন, Synthesia-এর ফ্রি সংস্করণে কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। 

সর্বোপরি, এইসব টুল ব্যবহার করতে আপনার ভিডিও এডিটিং স্কিলের কোন রকমের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র কিছু লেখা, ইমেজ ও পছন্দের টেমপ্লেট দিয়েই অল্প সময়ে মানসম্মত ভিডিও তৈরি করা সম্ভব। নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি আরও সুন্দর ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। 

Ai video মানে কি

এআই ভিডিও হচ্ছে এমন একটি ভিডিও যা তৈরি, সম্পাদিত বা প্রক্রিয়াজাত করা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা । এই প্রযুক্তির মাধ্যমে, মানুষের কোন সহায়তা ছাড়াই ভিডিও তৈরি দিতে পারে । 

এই প্রক্রিয়ায়, AI সফটওয়্যার মানুষের কণ্ঠ, মুখের আকৃতি, ছবি, পটভূমি এবং ভিডিওর গতিবিধি ও সংলাপ তৈরি করে দিতে সক্ষম। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আপনি যখন AI কে কোন লেখা বা স্ক্রিপ্ট দিবেন, তখন তা থেকে একটি সম্পূর্ণ ভিডিও তৈরি করে দেওয়া সম্ভব। 

AI কণ্ঠ তৈরি করে দিতে পারে, চরিত্র তৈরি করতে পারে, এবং এমনকি ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড যোগ করতে পারে। ভিডিও সম্পাদনা, ট্রানজিশন, সাবটাইটেল, এবং অ্যানিমেশন তৈরিতেও AI ব্যবহার করা হচ্ছে। 

বর্তমানে, AI ভিডিও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে ইউটিউব, টিকটক, ফেসবুক এবং বিভিন্ন মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে। কারণ এটি সময় এবং খরচে অনেক সাশ্রয়ী, সহজেই ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে সাহায্য করে। 

ভবিষ্যতে, শিক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্যে, বিনোদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে AI ভিডিওর ব্যবহার আরও বাড়বে। সুতরাং, AI ভিডিও মানে এমন একটি প্রযুক্তিনির্ভর ভিডিও যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুদ্ধিমান সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। 

AI এর জনক কে?

এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পিতামহ হিসেবে জন ম্যাকার্থি (John McCarthy)-কে সাধারণত সকলেই চেনে। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম 'Artificial Intelligence' শব্দটি ব্যবহার করেন এবং একই বছর ডার্টমাউথ কলেজে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন আয়োজন করা হয়, যা এআই গবেষণার সূচনা হিসেবে বেশ পরিচিত। 

এই সম্মেলনে কম্পিউটার বিজ্ঞানের নানা দিক তুলে ধরা হয় ও এআইকে একটি স্বতন্ত্র গবেষণা ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। 

জন ম্যাকার্থি কেবল এই শব্দটির উদ্ভাবক ছিলেন না, তিনি এআইয়ের উন্নয়নে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন। 

তিনি LISP নামে একটি প্রোগ্রামিং ভাষা তৈরি করেন, যা এআই গবেষণায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এছাড়া, তিনি সময় ভাগ করে কম্পিউটার ব্যবহারের (Time sharing) ধারণা নিয়ে আসেন, যা আজকের কম্পিউটিং ব্যবস্থার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

তার কাজ শুধুমাত্র তাত্ত্বিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি ব্যবহারিক ক্ষেত্রেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কার্যকরিতা নিয়ে কাজ করে গেছেন। 

এআইকে মানব সংশ্লিষ্ট চিন্তা ও সমস্যা সমাধানের উপযোগী করে তুলতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।  

এই কারণেই, জন ম্যাকার্থিকে সত্যিই  এআই এর জনক বলা হয়।

AI দিয়ে কি কি কাজ করা যায়

এআই (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আধুনিক প্রযুক্তির একটি বিশেষ অবদান, যা আমাদের জীবনকে নানা দিক থেকে সহজ এবং কার্যকরী করে তুলেছে। এআই এর মাধ্যমে অনেক  কঠিন  কাজ  সহজে করা সম্ভব, এর মধ্যে কিছু মূল দিক নিচে তুলে ধরা হলো। 

এআই ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়করণ (Automation) করা যায়। ফ্যাক্টরি, অফিস এবং বিভিন্ন শিল্প কল কারখানায় রোবট ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে যান্ত্রিক কাজগুলি দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করা যেতে পারে। এর ফলে শ্রমিকদের সময় সাশ্রয় হয় এবং উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

এআই প্রযুক্তি চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। রোগ নির্ণয়, চিকিৎসার পরিকল্পনা এবং নতুন ওষুধ আবিষ্কারে এআই সিস্টেমের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

ক্যান্সার সনাক্তকরণ, মেডিকেল ইমেজ বিশ্লেষণ, এবং রোগীর স্বাস্থ্য তথ্য বিশ্লেষণে এআই দ্রুত এবং সঠিক ভাবে ফলাফল দিয়ে থাকে। 

এআই ব্যবহার হচ্ছে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে, যেমন গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, সিরি এবং আলেক্সা। এই ডিজিটাল সহকারীরা আমাদের কথাবার্তা বুঝতে পারে, প্রশ্নের উত্তর দেয় এবং বিভিন্ন কাজ  মনে করিয়ে দেয়, ফলে আমাদের জীবনকে আরও সহজতর করে তোলে। 

এআই ডেটা বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার হচ্ছে। বড় কোম্পানিগুলি বাজার বিশ্লেষণ, গ্রাহকের রুচি বোঝা এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এআই মডেল ব্যবহার করে। 

গেমিং, ভিডিও এডিটিং, ছবি ও ভিডিও তৈরির কাজও এআই এর মাধ্যমে উন্নত হয়েছে। ছবির চিহ্নিতকরণ, স্বয়ংক্রিয় ভিডিও এডিটিং এবং সঙ্গীত রচনায় এআই গুরুত্বপূর্ণ সাহায্য প্রদান করছে। 

অতএব, এআই আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে শিল্প, চিকিৎসা, ব্যবসা, বিনোদন এবং বহু ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে, এআই আরও নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা মানুষের কাজকে আরও সহজ সুন্দর এবং সৃজনশীল করে তুলবে।

ভিডিও এআই ফ্রি?

ভিডিও এআই ফ্রি হলো এমন একটি প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিনামূল্যে ভিডিও তৈরি, সম্পাদনা বা উন্নত করার সুযোগ প্রদান করে। এই ধরনের এআই টুলস সাধারণত ইন্টারনেটে সহজেই পাওয়া যায় এবং তাদের জন্য কোনো অর্থ প্রদান করার প্রয়োজন হয় না। 

ফ্রি এই ভিডিও এআই টুলগুলো ব্যবহার করে ইউজাররা খুব সহজেই ভিডিওতে টেক্সট যোগ করতে পারেন, রঙ পরিবর্তন করতে পারেন, ভিডিও কাটছাঁট করতে পারেন এবং এমনকি অ্যানিমেশনও যুক্ত করতে পারেন। 

বিশেষ করে, যারা ভিডিও নির্মাণে একে বাড়ে নতুন, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত সহজ। কেননা, পেশাদার ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার প্রায়ই জটিল ও ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।

এআই এর মাধ্যমে ভিডিও তৈরি বা সম্পাদনার কাজ অনেক দ্রুত এবং সহজে করা যায় এবং তা বিনামূল্যে পাওয়া যায়। কিছু জনপ্রিয় ফ্রি ভিডিও এআই টুলের মধ্যে রয়েছে: Canva, Kapwing, InVideo, FlexClip ইত্যাদি। 

এগুলোতে ভিডিও তৈরি করা খুবই সহজ, যেখানে পাওয়া যায় কাস্টমাইজেবল টেমপ্লেট, মিউজিক, এবং ট্রানজিশন ইফেক্ট। 

ফ্রি ভার্সনে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, যেমন ভিডিওর দৈর্ঘ্য সীমিত হতে পারে বা সেখানে ওয়াটারমার্ক থাকতে পারে। তবে সামান্য এই সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, ফ্রি ভিডিও এআই টুলগুলো অনেক ক্ষেত্রে ছোট ও মাঝারি পর্যায়ের কাজের জন্য যথেষ্ট কার্যকর। 

টেক্সট টু ভিডিও এআই কিভাবে কাজ করে?

টেক্সট টু ভিডিও এআই হল এমন একটি প্রযুক্তি যা লেখাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওতে রূপান্তর করতে পারে। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) একটি শাখা, যেখানে মেশিন লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং ভাষা প্রক্রিয়াকরণ (NLP) একসঙ্গে কাজ করে থাকে। 

এই প্রযুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য গুলো হলো, ব্যবহারকারীর প্রদত্ত লেখার ভিত্তিতে ছবি, অ্যানিমেশন, শব্দ এবং দৃশ্য তৈরি করা, যা পরে একটি সম্পূর্ণ ভিডিও আকারে তৈরি হয়। 

প্রথমে, AI মডেলটি লেখাটি বিশ্লেষণ করে এবং এর বিষয়বস্তু বুঝে ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ লেখে একটি শিশু বাগানে খে্লা করছে, তবে AI প্রথমে বিষয়গুলো যেমন শিশু, বাগান এবং খেলা শনাক্ত করে। 

এরপর, এটি সংশ্লিষ্ট ভিজ্যুয়াল বা ভিডিও ক্লিপ খুঁজে বের করে অথবা জেনারেট করে। পরবর্তী ধাপে, AI এই দৃশ্যগুলোকে সাজিয়ে একটি নির্দিষ্ট গল্প বলার রূপ রেখা দেয়। এই গল্প বলার প্রক্রিয়ায় ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, বর্ণনা, এবং ক্যাপশনও সংযুক্ত করে দিতে পারে । 

উন্নত সিস্টেমগুলো যেমন Runway, Pika, Sora বা Lumen5, এই ধাপগুলোতে আরও বাস্তবসম্মত এবং মসৃণ রেন্ডারিং ব্যবহার করা হয় । 

এই প্রযুক্তিটি বিশেষ করে কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ডিজিটাল মার্কেটার, শিক্ষক, সাংবাদিক এবং ব্যবসায়ীদের জন্য খুবই উপকারী। কারণ এতে সময় এবং খরচ উভয়ই সাশ্রয় হয়।

তবে, এখনও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে, যেমন বাস্তবসম্মত মুখাবয়ব তৈরি করা, সূক্ষ্ম আবেগ প্রকাশ ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রকাশ পায় না। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি আরও উন্নত হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

শেষ কথা

বর্তমান সময়ে এআই (Artificial Intelligence) আমাদের জীবনের অনেক দিকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, বিশেষ করে ভিডিও তৈরি ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে। এটি একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। 

এখন আর পেশাদার ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার শেখার প্রয়োজন পড়ে না; বরং আপনি সহজে টেক্সট, স্ক্রিপ্ট, বা চিত্র ব্যবহার করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url